
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ছে যেসব কারণে
বিশ্বের সব দেশেই দিন দিন বাড়ছে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা। এক সময় অনেকেরই ধারণা ছিল যে, শুধু বয়স্কদেরই হয় ডায়াবেটিস। অথবা যাদের বংশে কারও ডায়াবেটিস আছে, তারাই পরবর্তী সময়ে এ রোগে আক্রান্ত হন। তবে এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। এখন কমবয়সীদের মধ্যেও বাড়ছে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা।
বেকারত্ব, লেখাপড়ার চাপ, বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন বেশি, অতিরিক্ত দুঃখ, দুশিন্তা, হতাশা থেকে কমবয়সীদের মধ্যে বাড়ছে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি। একই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা, নিয়মিত হাঁটা-চলা না করা কিংবা জাঙ্ক ফুডের প্রতি নির্ভরশীলতার কারণেও বাড়ছে ডায়াবেটিস রোগী সংখ্যা।
সেই সঙ্গে অতিমাত্রায় কাজের চাপ আর দুশ্চিন্তা। এ ধরনের পরিস্থিতিতে একজন মানুষের অধিকাংশ সময়ে বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন বেড়ে যায়। আর দিনের পর দিন এই ধরণের জীবন যাপনের জন্য অনেকেই ডায়াবেটিসে আক্তান্ত হচ্ছেন।
ডায়াবেটিস মানে হলো রক্তে চিনির মাত্রা বেড়ে যাওয়া। এমনিতেই আমাদের রক্তে বেশ কিছু উপাদান থাকে যেমন- নির্দিষ্ট পরিমাণে বিলিরুবিন, হিমোগ্লোবিন, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়ামসহ বহুবিধ উপাদান আছে। সেগুলো নির্দিষ্ট পরিমাণে থাকতে হয়। যখনই রক্তের কোনো উপাদান অতি মাত্রায় বেড়ে বা কমে যায়, তখনই শুরু হয় সমস্যা।
আমাদের দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস এবং অসচেতনতা রোগটির ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। জেনে নিন কোন কোন কারণে বাড়ছে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি।
১. অত্যধিক চিনিযুক্ত এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, উচ্চমাত্রায় চিনি খেলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
২. শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা ডায়াবেটিসের ঝুঁকির অন্যতম প্রধান কারণ। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, নিয়মিত ব্যায়াম বা শরীরচর্চা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে।
৩. জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল ইনভেস্টিগেশনে প্রকাশিত গবেষণা বলছে, ডায়াবেটিসের বংশগত দিকটির উপর জোর না দেওয়া ডায়াবেটিসের জটিলতা আরও বাড়িয়ে দেয়। পারিবারিক ইতিহাস আছে এমন ব্যক্তিদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি থাকে এটি ভুলে গেলে চলবে না।
৪. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার অভ্যাস না থাকলে জটিলতা আরও বাড়ে ডায়াবেটিসের। ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশন বলছে, ডায়াবেটিসের প্রাথমিক শনাক্তকরণ এবং ব্যবস্থাপনা উল্লেখযোগ্যভাবে এর জটিলতা হ্রাস করে।
৫. দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টকে ডায়াবেটিস প্রতিরোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে উল্লেখ করেছে।