শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ১১:৫৩ অপরাহ্ন
এইমাত্র পাওয়া
*** নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে দেশের শীর্ষ জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম বায়ান্নর বাংলাদেশ*** জেলা প্রতিনিধি*** ভিডিও কনটেইনসহ সিভি পাঠান।Bayanarbangladesh@gmail.com
৩৫ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন জবি শিক্ষার্থীরা
/ ৬৫ Time View
সোমবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২৫, ৫:২৩ অপরাহ্ন

মন্ত্রণালয় থেকে লিখিত অঙ্গীকার পাওয়ায় টানা প্রায় ৩৫ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় সংবাদ সম্মেলনে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এ কে এম রাকিব।

এর আগে বিকেল ৪টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। বেলা পৌনে ৫টার দিকে সচিবালয়ের সামনে এসে পৌঁছান তারা। এ সময় অনশনরত অসুস্থ শিক্ষার্থীরা স্যালাইনের স্ট্যান্ডসহ রিকশায় চেপে পদযাত্রা অংশ নেন। অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে এ কে এম রাকিব বলেন, ‘আগামী বুধবার যে মিটিং হবে, সেখানে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর চুক্তি স্বাক্ষর হবে—এ মর্মে লিখিত অঙ্গীকার পেয়েছি। এ ছাড়া বাণী ভবন ও ডা. হাবিবুর রহমান হলে অস্থায়ী স্টিল বেজড ভবনের নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে যাচাই ও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ফলে আমরা আমাদের অনশন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু তারা (সরকার) তিনটি দাবির দুটি মেনে নিয়েছেন এবং একটি যাচাই করে দেখবেন, সেহেতু আমরা অনশন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। তবে বুধবারের মিটিংয়ের আগপর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শাট ডাউন থাকবে।’

এর আগে সচিবালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা ‘বিপ্লবে বলীয়ান, নির্ভীক জবিয়ান’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘লজ্জা লজ্জা, ইউজিসি ইউজিসি’, ‘অনশন অনশন, চলছে চলবে’, ‘কবে দিবা ক্যাম্পাস’, ‘প্রশাসন কী করে, আমার ভাই অনশনে’—এমন নানা স্লোগান দেন।

দুপুর ২টায় সেনাবাহিনীকে দ্বিতীয় ক্যম্পাসের কাজ হস্তান্তর নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। সেনাবাহিনীকে কাজ হস্তান্তর বিষয়ে বুধবার সচিবালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে জানানো হয় চিঠিতে। চিঠি পাওয়ার পর অনশনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পাল্টা তিনটি দাবি জানানো হয়।

দাবিগুলো হলো সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষ মিটিংয়ের মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ করতে হবে এবং ভিজ্যুয়ালভাবে সবার সামনে তা উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকাবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে তা প্রকাশ করতে হবে। কয়েক মাস সময় নেওয়ার নাম করে কোনো প্রকার দীর্ঘসূত্রতার বন্দোবস্ত করা চলবে না; পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে; যত দিন অবধি আবাসন ব্যবস্থা না হয়, তত দিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

আজ সকাল থেকে পুরো ক্যাম্পাস শাট ডাউন ও টানা দ্বিতীয় দিনের মতো অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক, শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনে (সাবেক বিবিএ ভবন), রফিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। শাট ডাউন কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বিশ্বিবদ্যালয়ের সব বিভাগ ও দপ্তরে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। কোনো বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, ‘আমাদের সন্তানেরা জীবনের বাজি রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য, আবাসনের জন্য অনশনে ছিল। আশা করছি, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ ত্বরান্বিত হবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলেই আমাদের এই কার্যক্রম আরও সহজ ও ত্বরান্বিত হয়েছে। আমাদের কাজ অনেকটা এগিয়ে গেছে। মিটিংয়ে প্রকল্পের অবস্থাও বিশ্লেষণ করা হবে। তারপর একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সভায় আমরা বিবিধের সেক্টরে আমাদের দাবির অন্য বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব।’

উল্লেখ্য, গতকাল সকাল সাড়ে ৮টা থেকে অনশন করেন শিক্ষার্থীরা। অনশনে অসুস্থ হয়ে প্রায় ১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। উপাচার্যের বারবার অনুরোধেও অনশন ভাঙেন তারা।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category